২। ২। গাছ উচ্চতায় ২০-৩০ সেমি (৮-১২ ইঞ্চি), পাতা সরু ও চিকন, সবুজের মধ্যে ছাই- ছাই রং মেশানো।
৩। ৩। জোড়া ধরে সোজা হয়ে পাতা জন্মায়। ফুলঃ স্ত্রী, পুরুষ দুই ধরণের ফুল হয়, নীলচে সাদা (জাত বিশেষ হলুদাভ) রং। পাঁচটি পাঁপড়ি। ফলঃ গোলাকার ফল, কিনারায় আঁকর্শির মত বাড়তি অংশ থাকে। বীজঃ কালো রং এর প্রায় তিন কোণা আকৃিতর বীজ।
৪। ৪। বীজকোষ খাঁজ আকারে ফলের সাথে লম্বালম্বিভাবে থাকে।
৫। ৫। প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকতে পারে।
চাষাবাদ পদ্ধতিঃ
১ । কালোজিরা বপন পদ্ধতি
: পরিবেশঃ প্রচুর রোদ লাগে এমন যে কোন সমতল জমি প্রয়োজন।
মাটিঃ যে কোন মাটিতেই জন্মায়। বেলে-দোআঁশ মাটিতে ফলন ভালো হয়।
বপন সময়ঃ অগ্রহায়নের শেষ থেকেই লাগানো যায়। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে পৌষের প্রথমে লাগানো ভালো।
জমি তৈরিঃ ভাল করে কুপিয়ে বা লাঙ্গল দিয়ে মাটি মিহি করতে হবে। নিড়ানি দিয়ে ঘাস ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। অল্প পরিমাণ অর্থাৎ ১০ শতাংশ বা তার কম জমিতে চাষ করলে ৫ সেমি বা দুই ইঞ্চি উঁচু বেড তৈরি করা ভালো। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ৬ ইঞ্চ (১৫ সেমি) মাটি আলগা থাকে। অগ্রহায়নের মাঝামাঝি সময়ে মাটিতে জো আসলে জমি তৈরি করা আরম্ভ করা যেতে পারে। সার মেশানোর এক সপ্তাহ পরে প্রয়োজন হলে একবার নিড়ানি দিয়ে বেড তৈরি শেষ করতে হবে।
বপনঃ এক ফুট বা ৩০ সেমি. দূরে দূরে ১-৪ ইঞ্চি গর্ত করে প্রতি গর্তে ২-৩ টি করে বীজ পুততে হবে। খেয়াল রাখতে হবে বীজ বেশী গভীরে যেন না যায়।
অংকুরোদম সময়কালঃ ১২-১৬ দিন অর্থাৎ ০-২ সপ্তাহের মধ্যে গজাবে।
বীজের পরিমাণঃ ১০ শতাংশ জমিতে ৩৫০-৪০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।
বীজ শোধনঃ আলাদা করে শোধনের দরকার নেই। তবে বোনার আগে ভালো করে ধুয়ে ধূলাাবালি চিটা বীজ সরিয়ে নেওয়া ভালো। ভেজা বীজ বপন করা উচিত।
২ । কালোজিরার অন্যান্য পরিচর্যা
: বীজ লাগানোর পরই হালকা করে মাটি দিয়ে গর্ত ঢেকে দিতে হবে। পাখিতে বীজ খেতে না পারে, সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। জমি বেশি ভেজা থাকলে মাটি আলগা করে রস বের করে দিতে হবে।
৩ । সার ব্যবস্থাপনা
: ১০ শতাংশ জমিতে ১০ কেজি পচা গোবর ও ২ কেজি পচা খৈল, অথবা ১০ কেজি পরিমাণ যে কোন কম্পোস্ট মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বেড তৈরি করা যেতে পারে। মিহি মাটি দিয়ে সামান্য উঁচু বেড তৈরি করলে বেশি সার লাগবে না। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ৬ ইঞ্চ (১৫ সেমি) মাটি আলগা থাকে। অগ্রহায়নের মাঝামাঝি সময়ে মাটিতে জো আসলে জমি তৈরি করা আরম্ভ করা যেতে পারে। সার মেশানোর এক সপ্তাহ পরে প্রয়োজন হলে একবার নিড়ানি দিয়ে বেড তৈরি শেষ করতে হবে।
জমি তৈরির সময় ছাড়া পরে আর ্কোন সার দেওয়া প্রয়োজন নেই।
৪ । কালোজিরা সংগ্রহ ও পরবর্তী ব্যবস্থাপনা
: অংকুরোদগম সময় কালঃ
অংকুরোদগম/চারা গজােনাঃ ১২-১৬ দিন/০-২ সপ্তাহের মধ্যে।
গাছের বৃদ্ধিঃ ৩০-৪০ দিন
ফুল আসবেঃ ৩৫-৪২ দিন
ফল আসবেঃ ৪২-৫৫ দিন।
ফল পাকবেঃ ৬০-৮৫ দিন
বীজ বপনের সর্বমোট ১২ সপ্তাহের মধ্যে ফ পাকবে ও তোলার সময় হবে। অর্থাৎ পৌষের প্রথমে চাষ করলে ফাল্গুন-চৈত্রে মাসে ফসল তোলা যাবে।
৫ । ফলন
: ১০ শতাংশ জমিতে উপরের বর্ণনা অনুযায়ী চাষ করলে গড়ে ৩০-৩৫ কেজি কালোজিরা পাওয়া যাবে।
৬ । ফলন সংগ্রহ
: ফাল্গুন-চৈত্রে গাছ মরে গেলে গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে ২ দিন রোদে শুকিয়ে নিয়ে হাতে মাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা যায়। গাছে সামান্য রস থাকতেই ফল সংগ্রহ করা উচিত, নয়ত বীজ জমিতে ঝরে পড়তে পারে।
৭ । ফসল সংরক্ষণ
: চটের বস্তায় বা মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। অন্ততঃ এক বছর পর্যন্ত বীজ সংরক্ষণ করা যায়। শুকনো, অন্ধকার জায়গায় রাখতে হবে।